বাংলাদেশে দলিল রেজিস্ট্রেশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, বিশেষ করে জমি বা সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে। দলিল রেজিস্ট্রি খরচ নির্ধারণ করা হয় সরকারি আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী। এই খরচের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ফি এবং ট্যাক্স অন্তর্ভুক্ত থাকে।
১. দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি
দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি মূলত জমির বাজারমূল্যের একটি নির্ধারিত শতাংশ হিসেবে নির্ধারিত হয়। এটি সাধারণত ১% থেকে ২% এর মধ্যে হয়ে থাকে।
২. স্ট্যাম্প শুল্ক (Stamp Duty)
স্ট্যাম্প শুল্ক জমির মূল্যের উপর নির্ধারিত হয়। এটি সাধারণত ৩%-৪% এর মতো হয়ে থাকে, তবে অঞ্চলভেদে এবং জমির ধরন অনুযায়ী এই হার পরিবর্তিত হতে পারে।
৩. উৎসে কর (Source Tax)
জমি ক্রয়ের সময় ক্রেতাকে উৎসে কর প্রদান করতে হয়। এই কর জমির বাজারমূল্যের উপর নির্ধারিত হয় এবং সাধারণত ২%-৩% এর মধ্যে থাকে।
৪. ভ্যাট (VAT)
জমির অবস্থান (শহর বা গ্রাম) অনুযায়ী ভ্যাট নির্ধারিত হয়। শহরাঞ্চলে এই হার প্রায় ১.৫% থেকে ২% পর্যন্ত হতে পারে।
৫. মিউটেশন খরচ (Mutation Fee)
দলিল রেজিস্ট্রেশনের পর জমির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য মিউটেশন করতে হয়। মিউটেশনের জন্য পৃথক ফি প্রযোজ্য হয় যা স্থানীয় ভূমি অফিস নির্ধারণ করে।
৬. আইনজীবী ফি
দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য একজন আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া হলে তার জন্য অতিরিক্ত ফি দিতে হয়। এটি জমির মূল্যের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়।
৭. অন্যান্য খরচ
নামজারি খরচ: জমির মালিকানা পরিবর্তন করতে নামজারি ফি দিতে হয়।
নথিপত্র প্রস্তুত খরচ: দলিল তৈরি এবং অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুতের জন্য কিছু অতিরিক্ত খরচ প্রযোজ্য।
উদাহরণস্বরূপ হিসাব
যদি কোনো জমির বাজারমূল্য হয় ২০ লক্ষ টাকা, তাহলে সম্ভাব্য খরচ হতে পারে:
স্ট্যাম্প শুল্ক: ৪% = ৮০,০০০ টাকা
রেজিস্ট্রেশন ফি: ২% = ৪০,০০০ টাকা
উৎসে কর: ২% = ৪০,০০০ টাকা
ভ্যাট: ২% = ৪০,০০০ টাকা
অন্যান্য খরচ: আনুমানিক ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা
মোট খরচ: প্রায় ২,১৫,০০০ টাকা
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
স্থানীয় ভূমি অফিস বা রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সর্বশেষ ফি এবং করের হার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন।
দলিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা নিন।
রেজিস্ট্রেশনের সময় সমস্ত নথিপত্র সঠিকভাবে যাচাই করুন।