খতিয়ান কি ?, সিএস খতিয়ান , এস এ খতিয়ান , আর এস খতিয়ান

খতিয়ান : খতিয়ান ভূমি মালিকের রেকর্ড ।

সিএস খতিয়ানঃ

সার্বিক ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (Codastral Servey) কে সংক্ষেপে সিএস খতিয়ান বলে।এ জরিপে দেশের সকল জমির উপর বিশদভাবে নকশা প্রণয়ন এবং যেখানে প্রত্যেক মালিকের জন্য একটি দাগ নম্বর করে খতিয়ান তৈরি করা হয়। সি এস খতিয়ান  ১৮৮৮ সালে শুরু হয়ে ১৯৪০ সালে শেষ হয়। ১০০% জমি সরেজমিনে জরিপ করে খতিয়ান তৈরি করা হয় বলে বর্তমানে এর সাক্ষ্যগত মূল্য গ্রহণ যোগ্যতা অনেক ।

বৈশিষ্ট্য:

১। সিএস খতিয়ান (Cadastral Survey khatian): সিএস খতিয়ানের সাক্ষ্যগত মূল্য প্রচুর। কারণ এই খতিয়ান সরেজমিনে প্রস্তুতকৃত একটি নির্ভুল খতিয়ান ।

এসএ খতিয়ানঃ

১৯৫০ সালে পূর্ববঙ্গ রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন দ্বারা জমিদারী প্রথা বিলোপ করে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৭.১৮ এবং ১৯ ধারার বিধান মতে এক নতুন খতিয়ান সৃজন করে। তার নাম দেয়া হয় এসএ খতিয়ান।১৯৬২ সালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম উদ্দিন হোসেনের নেতৃত্বে সরকার ১টি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ তদন্তে এসএ জরিপের বিস্তর ভুলত্রুটি ধরা পড়ে।

আরএস খতিয়ান ( Rivisional Khation) :

রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৪ ধারা ও প্রজাস্বত্ব বিধিমালা মোতাবেক প্রণীত খতিয়ান। আরএস খতিয়ানের সাক্ষ্যগত মূল্য ১৪৪(ক) ধারায় সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ধারা অনুযায়ী প্রণীত খতিয়ানগুলি অবশ্যই সঠিক বলে ধরে নিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত সাক্ষ্য দ্বারা এগুলো ভুল প্রমাণীত না হয়। সিএস খতিয়ানের মতই আরএস খতিয়ানের সাক্ষ্যগত মূল্য প্রদান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে উক্ত আইনের বিধান মোতাবেক প্রণীত সংশোধিত খতিয়ানগুলো একই রকম সাক্ষ্যগত মূল্য বহন করবে।

আর এস জরিপ :

সিএস জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ সময় পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমি, মালিক এবং দখলকার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। পূর্বে ভুল ত্রুটি সংশোধনক্রমে আরএস জরিপ এতই শুদ্ধ হয় যে এখনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে আরএস জরিপের উপর নির্ভর করা হয়। এ খতিয়ান ও ম্যাপের উপর মানুষ এখনো অবিচল আস্থা পোষণ করে । আরএস খতিয়ানের বৈশিষ্ট্য :

১। আরএস খতিয়ানের উপরে নীচে লম্বা ।

২। প্রথম পৃষ্ঠার উপরে জেলা, মৌজা এবং খতিয়ান নং লেখা থাকে। তবে এই খতিয়ান নং -এ কেবল একটা নাম্বারই লেখা থাকে ।

৩। আরএস খতিয়ানের ২য় পৃষ্ঠায় দাগ নং কলামের উত্তর সীমানায় দখলদার নামে একটি কলাম আছে ।

যা অন্য কোন খতিয়ানে থা কে না। অনেক সময় দেখা যায়, আরএস খতিয়ানের ফরমে পিএস খতিয়ান লেখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘উত্তর সীমানার দখলকার’ এর ঘরটি খালি থাকে না। কিম্বা এ কলামটি কেটে দেয়া থাকে ।

পৃষ্ঠার নিচের অংশে কলামে যে গ্রুপের ৫। অনেক আরএস খতিয়ানের ‘স্বত্বের বিবরণ ও দখলকার’ তথা জমির মালিক ক, খ, গ, ঘ, ঙ ইত্যাদি গ্রুপে ভাগ করা থাকে । খতিয়ানের ২য় ‘অধীনস্থ স্বত্বের খাজানা প্রাপকের খতিয়ান নম্বর (মায় বাটা)’ নাম থাকে এবং তার পার্শ্বের কলামে অর্থাৎ ‘অধীনস্থা’ স্বত্বের বিভিন্ন খতিয়ানের নম্বর’ কলামে যে পরিমাণ শতক লেখা থাকে, বুঝতে হবে ঐ গ্রুপের পরিমাণ শতক জমি কর্তন হয়েছে। এটা যে কোন কারণ হতে পারে যেমন, বয়-বিক্রীবন্ধক ইত্যাদি। এক্ষেত্রে খতিয়ানের হিস্যা বণ্টনের সময় সর্বমোট সম্পত্তিকে ধরতে হবে ‘নিজ দখলীয় জমির মোট পরিমাণ’কে নয় ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x